হাম-হাম কথন ট্যুরে

এটা আমার প্রথম লিখা। ভুল ভ্রান্তি ক্ষমা করবেন। মূলত এই গ্রুপটার প্রতি কৃতজ্ঞতা থেকেই লিখার চেষ্টা। হাম হাম ঝর্নার ব্যাপারে এখানে বেশ কিছু পোষ্ট দেখেছি । এখানে দেখেই আসলে যাওয়ার ইচ্ছাটা তৈরী হয়েছে। যেই ব্যাপার গুলো আসলেই জেনে যাওয়া দরকার তার হলো জোঁকের ব্যাপারটা। এককথায় জোঁকের সর্গরাজ্য বলা চলে এই রাজকান্ধি বন কে। জোঁকের ব্যাপারে কি কি প্রস্তুতি নেওয়া দরকার তার প্রায় সবটাই নিয়ে যাই। আর একটা ব্যাপার যেটা গ্রুপ থেকে জানতে পারি তা হলো ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে পথটা কতটা ভয়াবহ হতে পারে তা আসলেই কেউ না দেখলে বিশ্বাস করবেন না। সবকিছু মাথায় রেখেই হামহাম দেখতে যাওয়ার প্ল্যান করি।

প্ল্যান অনুযায়ি বুধবার রাতে আমরা সায়েদাবাদ থেকে হানিফে রউনা দেই। যেহেতু বুধবার উপবন এক্সপ্রেস বন্ধ তাই আমাদের বাসেই যেতে হয়। ঢাকা থেকে মৌলভিবাজার হানিফ/শ্যামলি ভাড়া ৩৮০/= তাছাড়া এনা (মহাখালী থেকে) ভাড়া ৪০০/=
রাত ১২ টায় রউনা দিয়ে পরদিন সকাল ৫ টায় শ্রীমঙ্গল পৌছে যাই। বাস থেকে নামতেই চান্দের গাড়ি দেখতে পাবেন। ভাড়া ঠিক করে নিবেন সারাদিনের জন্য। আমরা ৭ জন ছিলাম, নামার পর আরো ৫ জনের একটা গ্রুপের সাথে দেখা হয় উনারা একটা চান্দের গাড়ি ঠিক করেছে। আমাদের যোগ দিতে বললে আমরাও রাজি হলাম। কিন্তু উনাদের আর একজন আসবেন তাই ২ ঘন্টা দেরি করতে হবে। এতটা দেরি আমাদের কারো সহ্য হলো না। আমরা একটা গাড়ি থিক করে নিলাম ১৮০০ টাকায় সারাদিনের জন্য। বৃহস্পতিবার বলে এত কমে পেয়েছি। ড্রাইভার মামা অনেক ভালো ছিল (খোরশেদ মামা- ০১৭১২৫৩৪০৭১)। সকাল বেলায় খাওয়ার জন্য আমরা চলে যাই পাঁচভাই রেস্টুরেন্ট এ। এখানেও মোটামটি সিলেটের মত করেছে। ৪০ টাকা প্লেট খিচুরি ভিতরে একটা মুরগির পিস সাথে জল্পাই এর একটা চাটনি দিয়ে চমৎকার খাওয়া হয়ে গেল। তারপর যাত্রা শুরু করলাম কলাবন পাড়ার উদ্দেশ্যে। সেখানে পৌছাতে সময় লাগলো ২ ঘন্টা। এখানে এসে ড্রাইভার মামাই আমাদের গাইড দেখায় দিলেন পরিচিত কিন্তু আমাদেরকে বললেন টাকাপয়সার ব্যাপারে কথা বলে নিতে। আমরা কথা বলে ৩৫০ টাকায় গাইড মামাকে রাজি করালাম। এরপর খাবার অউরডার দিয়ে রউনা হলাম হাম হাম এর উদ্দেশ্যে। সকাল থেকে বৃষ্টি হয় নি। আকাশ মাঝে মাঝে মেঘলা হচ্ছে । আমরা আশা করছিলাম যেন বৃষ্টি না হয়। টানা দেড় ঘন্টার পাহাড়ি উচুনিচু পথ। জোঁকের ব্যাপারে সচেতন থাকলেউ মাছির ব্যাপারে ধারনা ছিল না। বৃষ্ট না থাকলে এই মাছি গুলো খুব ঝামেলা করে। এদের আচরনে মনে হয় এরা কখনো মানুষ দেখে নাই। নির্ভয়ে এসেই কামর। তাউ বলবো বৃষ্টির ভয়াবহতা থেকে এইটা ভাল। ঝর্ণা দেখতে অবস্যই আসবেন বর্ষাকালে আর দোয়া করবেন বৃষ্টি যেন না হয়। যাই হোক কষ্ট করে হামহাম ঝর্নায় পৌছানোর পর অবস্যই আপনার কষ্ট স্বার্থক মনে হবে। এক মূহুর্তে সব ক্লান্তি দূর হয়ে যাবে। অবস্যই সপ্তাহের মাঝে কোন দিন যাওয়ার চেষ্টা করবেন। ছুটির দিন গুলোতে প্রচুর মানুষ থাকে। মানুষের ভিরে প্রকৃতির সাথে মিশে যেতে পারবেন না। আর মানুষ বেশি থাকলে বন্য প্রানী যেমন বানর, বনমোরগ, হনুমান ও অনেক পাখির দেখা পাবেন না। যা আমাদের সৌভাগ্য হয়েছিল। চাইলে ভিডিও টা দেখে নিতে পারেন। পুরো পথাটা সম্পর্কে ধারনা পাবেন ।

আমি সব সময় একটা কথা বলি Hope for the best prepare for the worst. We were prepared for the worst situation but luckily got the best weather.
খরচঃ
ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গল বাস = ৩৮০
চান্দের গাড়ি জনপ্রতি পরেছে = ২৬০
গাইডের খরচ জনপ্রতি পরেছে = ৫০
খাবার তিন বেলা জনপ্রতি = ৩০০
রাতে ঢাকা ফেরা পরবে = ৪০০
মোট = ১৩৯০ /=

Source: Rysul Hasan <Travelers of Bangladesh (ToB)

Share:

Leave a Comment